ভেজা কিসমিস খেলেই রোগমুক্ত থাকবে শরীর
By -
March 08, 2022
1
কিসমিস শরীরে আয়রনের ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি রক্তে লাল কণিকার পরিমাণ বাড়ায়। কিন্তু শুকনো কিসমিস খাওয়ার বদলে ভিজিয়ে খেলে উপকার বেশি। কিসমিস ভেজানো পানি রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। রোজ কিসমিসের পানি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পাবেন ওষুধ ছাড়াই।
যৌন সমস্যা প্রতিরোধক কিসমিস
যৌন সমস্যা প্রতিরোধক কিসমিস
যৌন সমস্যা প্রতিরোধক কিসমিস
অতি পরিচিত, প্রিয় একটি উপাদান, যা পায়েস থেকে কেক, সব কিছুতে একটু না দিলে মনে হয় কী যেন নেই। অনেক উপকারিতা রয়েছে ছোট ছোট কিসমিসের দানাতে। কিসমিস হচ্ছে রোদে বা ড্রায়ারে শোকানো আঙুর। রঙ সোনালী কিংবা গাঢ় বাদামী। কিসমিস যেমন নানা ধরনের সুখাদ্যে রান্নার সময়ে দেয়া হয়, তেমনি হেলথ টনিক বলুন বা হাই এনার্জি ফুড সাপ্লিমেন্ট হিসেবেও খাওয়া হয়ে থাকে। শুকনো বলে কিসমিস-এর ফাইবারগুলোও শুকিয়ে থাকে। ফলে জলের মধ্যে পড়লে সেগুলি ফুলে ওঠে। এটা পেটের ভেতরে বাকি খাবারের সাথে গেলে পেটের স্বাভাবিক ফ্লুইডগুলিকে টেনে নিয়ে ফুলে ওঠে এবং খাবার পাকস্থলী থেকে নিচে নামতে সাহায্য করে, ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় যারা ভোগেন তারা নিয়মিত কিসমিস খেতে পারেন। কিসমিসে যে ফাইবার থাকে সেটা জলে গলে না, তাই এটাকে ইনসলিউবল ফাইবার বলা হয়। সেই জন্যই কিসমিস জল টেনে ফুলে ওঠে। একইভাবে, ডায়েরিয়া সমস্যাতেও কিসমিস সাহায্য করে, কারণ স্টুলের অতিরিক্ত জল শুষে নেয় কিসমিস, ফলে বারবার বেগ
পাওয়াটা আটকে দেয়। সব ড্রায়েড ফ্রুট যেমন খেজুর কাজুবাদাম ইত্যাদির মতই, কিসমিস ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। কারণ এতে আছে প্রচুর ফ্রুক্টোজ এবং গ্লুকোজ এবং পোটেনশিয়াল এনার্জিতে ভরপুর এই কিসমিস। বডিবিল্ডার বা এথলেটদের ক্ষেত্রে কিসমিস খেতে বলা হয় কারণ তাদের প্রচুর এনার্জি লাগে বা ওজন বাড়ানোর জন্য ক্ষতিকর কোলেস্টেরল এড়িয়ে কিসমিস খেলে সুস্থ ভাবে ওজন বাড়তেও সাহায্য পাওয়া যায়। কিসমিসে আছে ভিটামিনস, অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং সেলেনিয়াম এবং ফসফরাসের মত মিনারেল, যেগুলি প্রোটিন এবং অন্যান্য নিউট্রিয়েন্টগুলিকে শোষিত হতে সাহায্য করে। এছাড়াও কিসমিস অন্যান্য খাবার থেকে প্রাপ্ত ভিটামিন, প্রোটিন শরীরে শুষে নিতেও সাহায্য করে, ফলে সার্বিক এনার্জির মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে আরো শক্তিশালী করে তোলে।
সেক্সুয়াল সমস্যা প্রতিরোধ: কিসমিসকে বহুদিন থেকেই লিবিডো বর্ধনকারী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আর্জিনিন যা পাওয়া যায় কিসমিসে, তা স্পার্মের চলাচলে সাহায্য করে, যেটি গর্ভধারণে সাহায্য করে। ভারতীয় বিয়েতে বৌভাতের দিনে বর বধূকে গরম দুধে কিসমিস এবং কেশর দিয়ে খাওয়ানোটা প্রাচীন রীতি। যাদের যৌন সহনশীলতা কম, তাদেরকেও রেগুলার কিসমিস খেতে পরামর্শ দেয়া হয়।
তবে অধিক পরিমাণে কিসমিস খেলে সমস্যা হতে পারে, তাই অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন, বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস আছে, তারা। কারণ ফ্রুক্টোজ বা গ্লুকোজ ডায়াবেটিস-এর রোগীর জন্য মারাত্মক হতে পারে। কিসমিস ছোট হলেও উপকারিতা অনেক।
এছাড়া, কিসমিস হৃদয় ভালো রাখে। নিয়ন্ত্রণে রাখে কোলেস্টেরল। কিসমিসে প্রচুর ভিটামিন এবং খনিজ আছে। আছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা সহজে রোগমুক্তির কারণ। আর আছে প্রচুর আয়রন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার।
কিসমিস খাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় সারারাত কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সকালে সেটা খান। ভেজানো কিসমিসে থাকে আয়রন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার। তাছাড়া এতে থাকা প্রাকৃতিক চিনি শরীরের কোন ক্ষতিও করে না। হাই ব্লাডপ্রেসারের সমস্যা থাকলেও এটি তা বশে রাখে। একইভাবে কিসমিস
ভেজানো পানিও শরীরের পক্ষে উপকারি।
এবার জেনে নিন ভেজানো কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে...
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আপনি যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বড়াতে চান, তবে ভেজা কিসমিস এবং তার পানি নিয়মিত খান। এর মধ্যে রয়েছে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রোগের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
শরীর রাখে বিষমুক্ত
শরীরকে দূষণমুক্ত করতে কিসমিস খান নিয়মিত। চারিদিকের দূষণে আপনি যখন জেরবার তখন সকালে খালি পেটে ভেজানো কিসমিস খেলে শরীর বিষমুক্ত হবে। ভেজানো কিসমিসের পাশাপাশি কিসমিস ভেজানো পানিও খেতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়
নিয়মিত কিসমিস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে। আপনি যদি পেটের সমস্যায় নিয়মিত ভোগেন, তাহলে প্রতিদিন সকালে খালিপেটে ভেজানো কিসমিস খান। যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে কষ্ট পান তারা ওষুধের বদলে নিয়মিত কিসমিস খেয়ে দেখতে পারেন।
বশে রাখে ব্লাড প্রেসার
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের প্রাকৃতিক পদ্ধতিগুলোর মধ্যে একটি কিসমিস। এর মধ্যে থাকা পটাসিয়াম হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে।
রক্ত স্বল্পতা কমায়
রক্ত স্বল্পতা কমাতে কিসমিস যথেষ্ট উপকারি। নিয়মিত খেলে এর মধ্যে থাকা আয়রন হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়। এছাড়াও, এর মধ্যে আছে তামা যা রক্তে লাল রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে।
হজমশক্তি বাড়ায়
সুস্থ থাকার জন্য ভালো হজমশক্তি জরুরি। এক্ষেত্রে কিসমিস হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। রোজ রাতে এক গ্লাস পানিতে কিসমিস ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন ভোরে সেই কিসমিস খান। তারপর নিজেই খেয়াল করুন ফলাফল দিন পনেরো পরেই।
তবে, কিসমিস খাওয়া যেমন উপকারি একইভাবে বেশি পরিমাণে কিসমিস খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। কিসমিস ফ্রুকটোজের পাশাপাশি গ্লুকোজ সমৃদ্ধ। যা ওজন বাড়িয়ে দেয়। অতিরিক্ত খেলে শ্বাসকষ্ট, বমি, ডায়রিয়ার মতো সমস্যা হতে
পারে। তাই কম করে কিসমিস খান প্রতিদিন।
এএইচ/
Excellent post
ReplyDelete